
মা-ই তো কালী
Audio File:
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
সত্যি কথা বলতে গেলে
মা-ই তো কালী।
কেন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে
একটি ঘটনা বলি।
সেটা সতেরো শো বিরাশি
সালের একটি সময়।
বর্গীরা লুটপাট চালাতে বাঁকুরায়
সোনামুখি গ্রামে হাজির হয়।
সেই গ্রামের জঙ্গলে
পাতার ছাউনিতে এক মন্দির।
সেই মন্দিরের পূজ্যা দেবী
করাল বদনা মা কালীর।
একদিন সন্ধ্যায় এক বৃদ্ধ
সেই মন্দিরে আসেন।
হাতের প্রদীপটি জ্বলিয়ে
মাকে প্রণাম করেন।
হঠাৎ সেই জায়গায়
বর্গীর দল হাজির হয়।
সামনে মায়ের হাঁড়িকাঠে
তাদের সর্দার বৃদ্ধকে বলি দিতে যায়।
সর্দার খাঁড়াটি মাথার ওপর তুলে
কোপ মারতে উদ্যোগি হয়।
কিন্তু মায়ের আশীর্বাদে
খাঁড়াটি ওপরেই আটকে যায়।
সর্দারের মনে হয়
কেউ যেন পিছন থেকে,
তার শক্তিমান হাতটিকে
অদৃশ্যভাবে ধরে রেখেছে।
মুহুর্তের মধ্যে সর্দার
অন্ধ হয়ে যায়।
কিংকর্তব্যবিমুঢ়় হয়ে সর্দার
বৃদ্ধের কাছে ক্ষমা চায়।
বৃদ্ধ বুঝতে পারে,
এসবই মা কালীর খেলা।
সে ভাবে, এ যেন তার পুনর্জন্ম
প্রত্যক্ষ করে মায়ের লীলা।
মায়ের কৃপায় বিগলিত হয়ে
বৃদ্ধও কাঁদতে থাকে অঝোরে।
বর্গী সর্দারও সব বুঝে
বৃদ্ধের পা জড়িয়ে ধরে।
সর্দার বৃদ্ধকে বলে,
ক্ষমা করে দাও আমারে।
চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দাও
আমায় দয়া করে।
হতচকিত বৃদ্ধ মায়ের
সামনে রাখা ঘটের থেকে,
একটু জল নিয়ে
ছিটিয়ে দেয় সর্দারের চোখে।
মায়ের অমোঘ লীলায়
সর্দার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়।
সর্দার বৃদ্ধকে তার লুটের
সব ধন সম্পত্তি দিয়ে দেয়।
বৃদ্ধ তাদের লুটের ধন
নিতে অস্বীকার করে।
কোন দেবতার পূজা হয়
সর্দার জিজ্ঞেস করে।
বৃদ্ধ তাকে বলে,
এখানে আছেন মা কালী।
সর্দার বলে, তাই তো ইনি মায়ের মতো
সত্যিই মা-ই তো কালী।
এটি শ্রী দূর্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের লেখা থেকে সংকলিত।

