-
|| শ্যামল, রাধিকা ও স্বপ্নার গল্প – চার ||
Please visit my Youtube channel : Kaleedas Kobita
A story of Shyamal, Radhika and Swapna –4
শ্যামলদের বাড়ীতে সেদিন
রাধিকা এসেছে।
শ্যামল তো বাড়ীতে নেই তাই সে
শ্যামলের মায়ের সঙ্গে গল্প করছে।
এমন সময় শ্যামলের মা দেখে
শ্যামল বাড়ী ফিরেছে।
সঙ্গে বাইকের পিছনে বসা একটি মেয়ে।
শ্যামলের সঙ্গে মেয়েটি বাড়ীতে আসছে।
মেয়েটির শ্যামলা স্লিম চেহারা
দেখতে কিছু আহামরি নয়।
কিন্তু মুখে একটা ঔজ্বল্য আছে
যা একবার দেথলে আবার দেখতে হয়।
মেয়েটিকে শ্যামলের সঙ্গে দেখে শ্যামলের মা
ও রাধিকার কৌতুহলের শেষ নেই।
ʼতোমার নাম কি মাʼ?
শ্যামলের মা প্রশ্ন করে।
ʼআমার নাম স্বপ্নাʼ
মেয়েটি জানায় উত্তরে।
তারপর শ্যামল
স্বপ্নার পরিচয় পর্ব শুরু করে ।
সব কথাতেই শ্যামল
স্বপ্নার প্রশংসা করে।
অনেকক্ষন ধরে শ্যামলের কথা
রাধিকা খুব মন দিয়ে শুনে যায়।
তারপর স্বপ্নার এত প্রশংসা শুনে
বিরক্ত হয়ে গুটিগুটি বেরিয়ে যায়।
শ্যামলের মা রাধিকাকে
পছন্দ করে।
তার স্বপ্নাকে দেখে মনে হয় যে এ মেয়েটিই
বোধহয় এ বাড়ীর লক্ষ্মী হতে পারে।
স্বপ্নার খাওয়া দাওয়া ও নানান কথাবার্তা হয়
শ্যামলের মা ও শ্যামলের বাবার সাথে।
হঠাৎই শ্যামলের মা স্বপ্নাকে প্রশ্ন করে বসে
ʼকবে বিয়ে করবেʼ?
স্বপ্নার শ্যমলা মুখ
লাল হয়ে যায় এই প্রশ্নটাতে।
মুখে চাপা একটা খুশির ঝলক নিয়ে
সে শ্যামলের দিকে তাকিয়ে থাকে।
উত্তরটা শ্যামলই দেয়,
ʼমা আমরা বিয়ে করতে পারি ছʼমাস বাদেʼ।
ʼতার আগে ফ্যাকটরিরʼ
ʼসেলসটা ঠিক করতে হবেʼ।
মা ছেলের কথা শুনে
মুচকি হাসে।
ভাবে এদ্দিনে ছেলের
বিয়েতে মতি হয়েছে।
অবলীলায় কখন যেন সবাই
রাধিকাকে ভুলে গেছে।
মনে হয়, রাধিকার ওই মায়াময় মুখে
কখন যেন আঁধার ঘনিয়ে এসেছে।
-
|| শ্যামল, রাধিকা ও স্বপ্নার গল্প – তিন ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
A story of Shyamal, Radhika & Swapna -3
পঞ্চভূত – স্বপ্নার কথা
স্বপ্নার বাড়ীর খবর
বলি এবার।
পাঁচজন মানুষের পঞ্চভূজের এতই সমন্বয়
যে এটা সবার শেখার।
পঞ্চভূজের মধ্যমণি
বড় মেয়ে স্বপ্না।
বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে ছোট ছেলে দীপক
আর ছোট মেয়ে রত্না।
পাঁচ জনের এই সংসার
এ কথা সবাই জানে।
য়ে যার কাজ করে যায় এখানে
ঝগড়ার প্রবেশ নিষেধ এখানে।
বাবার আছে মুদির দোকান
ভায়ের চাকরী কারখানায়।
হসপিটালের নার্স রত্না
মায়ের পছন্দ ঘরকন্যায়।
স্বপ্না করে
শাড়ীর ব্যাবসা।
শাড়ী আসে নানান জায়গা থেকে
স্বপ্নার কাজ সেগুলো বিক্রি করা।
শ্যামল একদিন বাড়ী থেকে বেরিয়ে
পার্কে বসে আছে।
ব্যাবসা নিয়ে কারো সঙ্গে কথা বলার থাকলে
স্বপ্না এই পার্কে চলে আসে।
সেদিন স্বপ্না একজনের সঙ্গে কথা বʼলে
বাড়ী ফিরে যাচ্ছে।
এমন সময় সে শ্যামলকে দেখে বলে,
ʼআপনি রোজ আসেন, সমস্ত দিন বসে চলে যানʼ।
ক্লিষ্ট শ্যামল শুনে
প্রথমে একটু থতমত খেয়ে যায়।
তারপর বলে, ʼআপনি কেʼ?
ʼআপনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম নাʼ।
ʼআমি স্বপ্না, কাছেই থাকিʼ,
ʼকাজের জন্য এখানে প্রায়ই আসিʼ।
এরপরে দুজনে অনেক কথা বলে
তারপর দুজনেই বাড়ী ফিরে যায়।
পরদিন আবার দুজনে
কথা বলতে আসে এখানে।
স্বপ্নার ভবিষৎ পরিকল্পনা শুনে শ্যামল ঠিক করে
দুজনে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এরপর ব্যাঙ্কে এপ্লিকেসন, ব্যাঙ্ক লোন,
প্রজেক্ট এক্সেকিউসন সারে।
একটার পর একটা কাজ শেষ করে
প্রোডাকসন শুরু করে।
একসঙ্গে দুজনে কাজ করে
এতটাই কাছাকাছি এসে যায়
যে তারা প্ল্যান করে
এবারে দু-বাড়ীতে জানাতে হবে।
-
|| শ্যামল, রাধিকা ও স্বপ্নার গল্প – দুই ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
A story of Shyamal Radhika & Swapna – 2
এক অন্য ত্রিভূজ – রাধিকার কথা
রাধিকার বাড়ীর খবর
বলি এবার।
শ্যামলের পাশের বাড়ী
সুন্দরী কন্যা রাধিকার।
বিশাল বাড়ীর একজন রাধিকা
বড়লোকের একমাত্র মেয়ে।
বাবার আছে বড় চালকল
সৌখিন মা ব্যস্ত ক্লাব কালচার নিয়ে।
এই তিনজন থাকে এ বাড়ীতে
বাবা-মা ব্যস্ত নিজেদের কাজে।
রাধিকার পছন্দ নয় বাবা মাʼর সঙ্গ
তাই সে নিজের মতই থাকে।
গায়ের রঙ ফর্সা যে তার
আর টানাটানা চোখ।
মায়াবী মুখটা মমতায় ভরা
রূপের প্রশংসায় সর্বোলোক।
একদিন ক্লাবে মা নিয়ে যায়
আলাপ করায় এক বান্ধবীর ছেলের সাথে।
ঐ সব ছেলে পছন্দ হয়না
তাদের নানান সব আধুনিক কাজে।
শ্যামলদার সহজ জীবন
মনের কোথায় যেন সেই ভালোলাগাটা আছে।
মাঝে মাঝে যায় ওদের বাড়ীতে
কথা হয় তখন শ্যামলের সাথে।
বাবার সময় একদম নেই
চালকল নিয়ে ব্যস্ত তিনি।
মেয়েকে সবসময়েই সাপোর্ট করেন
মেয়ের সব কাজে রাজী উনি।
শ্যামলের মা মনে মনে চায়
রাধিকাকেই ছেলের বউ করতে।
শ্যামলের বাবা মধ্যবিত্ত
চায়না বড়লোকের বাড়ীতে হাত বারাতে।
শ্যামল বিয়ের কথা শুনলেই বলে,
ʼএত তাড়তাড়ী কে ভাবছেʼ?
রাধিকার চোখে ভালবাসা দেখে
গুটিয়ে ফেলে সে নিজেকে।
শ্যামলের জন্যে পায়েস আনে সে
বলে, ʼশ্যামদা আমি নিজে বানিয়েছিʼ।
ʼখেয়ে দেখ তো কেমন হয়েছেʼ?
ʼসবাই কিন্তু ভালই বলছেʼ।
শ্যামল খেয়ে বলে,
ʼবেশ ভাল হয়েছেʼ।
ʼমিষ্টি খাবার খাইনা আমিʼ
ʼতূই আনলি তাই খেয়েছিʼ।
এভাবেই ভালোলাগা চলে ধীর গতিতে
দুজনেই অব্যক্ত।
ওদের মনের পায়না কিনারা
বাবা মাʼরাও থাকে দ্বিধা-বিভক্ত।
-
|| শ্যামল, রাধিকা ও স্বপ্নার গল্প – এক ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
A story of Shyamal, Radhika and Swapna -1
( পুরো গল্পটি কয়েকটি কবিতায় সম্পন্ন হবে। আজ প্রথম পর্ব। )
দুটো মেয়ে, একটা ছেলে
এ তো ত্রিভূজ হয়ে গেল।
ত্রিভূজ প্রেমের ছেঁদো গল্প
এবার শুরু হোল?
এক চতুর্ভূজ – শ্যামলের কথা
শ্যামলের বাড়ীর খবর
বলি এবার।
চারটি প্রাণী থাকে এখানে
সুখি পরিবার।
শ্যামলের বাড়ীতে শ্যামল ছাড়া
আছে ছোটোবোন শ্যামলী।
এছাড়া থাকে বাবা-মা
শান্তির গৃহস্থালী।
বাবা রিটায়ার্ড ব্যাঙ্ক অফিসার
মা হোম মেকার।
বাড়ীর সব কাজ মায়ের হাতে
বাবার শুধু বাজার।
ছোটোবোন কলেজে পড়ে
তার এখন থার্ড ইয়ার।
শ্যামল একটা ছোট প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরী করে
সেলস-এ কাজ তার।
শ্যামল, শ্যামলী বেরিয়ে গেলে
বাবা-মা থাকে ঘরে।
ছেলে মেয়েটার বিয়ে দিতে হবে
আর নানান চিন্তা করে।
পড়াশুনাতে কখনোই ভাল ছিল না শ্যামল
তাই তার গ্রাজুয়েসনই হয়েছে।
পাশ করে সে চাকরী খোঁজে
সেল্সের চাকরী পেয়েছে।
চেহাড়াতে সে সুদর্শন,
বাইক চালায় রাস্তা ঘাটে।
অনেক মেয়েই দেখে তাকে
বন্ধু হʼতে সবাই মাতে।
ঘুম কাতুরে শ্যামল বড়,
লেট রাইজিং তার স্বভাব।
এর জন্য নানান কথা শুনেছে সে
এখন এটাই হয়ে গেছে তার অভ্যাস।
সেদিন একটা কাস্টমার মিটিং
অফিসে সাড়ে নʼটায়।
যথারীতি দেরী হলো
অফিসে পৌঁছোলো এগারটায়।
অনেকবারই বসের ওয়ার্নিং
সে হজম করেছে।
আজকে সে প্ল্যান করেছিল
সময়ে পৌঁছোবে সে।
গতকালের বিরিয়ানি আর চিকেন কষা
বাধায় গন্ডগোল।
লুজ-মোশন শুরু হয় আজ
দেড় ঘন্টা ভন্ডুল।
অফিসে আজ ঢুকছে যখন
বসের ডাক আসে।
বস বলে, ʼসবই যদি আমি সামলাবʼ,
ʼতবে তুমি আছ কিসেʼ?
ʼআজ থেকে আর দরকার নেইʼ
ʼতোমার ফাইনাল হিসেব বোঝোʼ।
ʼকাল খেকে আবার রাস্তায় নামোʼ
ʼনতুন চাকরি খোঁজোʼ।
চাকরি গেল এক লহমায়
কিছু বলার আগে।
দুঃখ হয় তার মনে মনে
পায়না কিছু ভেবে।
বাড়ীতে তো বলা যাবে না
কিছু পাওযার আগে।
বাবার অনেক চিন্তা হবে
আমার কথা ভেবে।
পরদিন থেকে অফিস টাইমে
খেয়ে দেয়ে বেরোয় সে।
দূরে একটা পার্কে আসে
একটা বেঞ্চে এসে বসে সে।
-
|| ভগবানের ভালবাসা ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Bhagabaner Balobasa
ʼহ্যাঁ গো, আমি ভগবানেরʼ
ʼভালবাসা পেয়েছিʼ।
ʼসেটা আবার কিʼ?
ʼভগবানকে দেখেছোʼ?
ʼনা, ভগবানকে তো দেখিনিʼ
ʼকিন্তু ভালবাসা উপলব্ধি করেছিʼ।
ʼআরে চুপ চুপʼ,
ʼপেলেও, এসব কথা কেউ বলে নাʼ।
ʼকেন কি হবে বললেʼ?
ʼভালবাসা থাকবে নাʼ?
ʼআরে ভগবান তো তোমাকেও ভালবাসেʼ
ʼজানো না তোʼ?
ʼতুমি যখন ভাল কাজ করোʼ,
ʼনিজের মনে একটা শান্তি পাও তোʼ?
ʼওটাই তো ভালবাসাʼ
ʼকি বুঝলে তোʼ?
দেখ ভগবান আমাদের
সব্বাইকেই ভালবাসেন।
এই প্রাণী জগৎ তাঁর সৃষ্টি
তাদের রক্ষণাবেক্ষণ তিনিই করেন।
ʼতোমার কবিতা লেখার শখ হয়েছে জানিʼ
কিন্তু এসব উল্টোপাল্টা কিʼ?
ʼএসব উল্টোপাল্টা নয়ʼ
ʼসবই সত্যিʼ।
ʼআমরা সবাই ভগবানেরʼ
ʼচারিদিকে ঘুরছিʼ।
ʼঘুরছি কেন ʼ?
ʼসবাই হাঁটছি তো জীবনের পথেʼ।
ʼসবাই ভগবানকে ডাকছি বা দোয়া করছিʼ
ʼভগবানকে সামনে রেখেʼ।
তাহলে আমাদের গতিপথটা
গোলই হʼলো তো।
পৃথিবীর চারদিকে
উপগ্রহরা যেমন ঘোরে।
আমাদের প্রত্যেকের অরবিট
আলাদা আলাদা।
কেউ কারো অরবিট জানেনা
তোমার প্রিয় ছেলের অরবিটও তুমি জান না।
তুমি যেমন কাজ করে চলেছ
তোমার রাস্তা তেমনই তৈরী হচ্ছে।
ভাল কাজ করলে ফুল বেছানো
রাস্তায় সাঁ সাঁ করে এগোবে।
ভাল কাজ না হʼলে, এবড়ো খেবড়ো রাস্তায়
হোঁচট খেয়ে মুখ থুবরে পড়বে।
আবার অনুশোচনা করে
ঠিক পথে ছুটে যাবে।
সবারই ভগবান আছেন
সেটা তুমি মানো কিম্বা না মানো।
ডাক্তারেরা ʼও গডʼ বʼলে
ক্রিটিক্যাল অপারেসনে হাত দিচ্ছে।
মহাকাশচারীরাও তাঁকে স্মরণ করে
মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছে।
ক্রিকেটারাও সেন্ঞ্চুরি করে
ওপরের দিকে তাকাচ্ছে বা মাটিতে চুমু খাচ্ছে।
তাই ভগবান
সবাইকে ভালবাসেন।
তোমার নিজের সব ভাল কাজেই
তিনি লুকিয়ে মিটি মিটি হাসেন।
-
|| চাওয়া পাওয়া ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Chawa Pawa
আচ্ছা, আমরা যা চাই,
তাই কি পাই?
আর যা পাই,
সেটাই কি আমরা চাই?
এটা একটা গোলোক ধাঁধার মতো, চিন্তা করলে
সব গন্ডগোল হয়ে যায়।
তবে এই চাওয়া-পাওয়ার
একটা ব্যালান্সিং হয়।
কেউ ছোটোবেলায় ভাবে ডাক্তার হবো
কিন্তু অঙ্কে ভাল বলে বাবা ইন্জিনিয়ারিং-এ পাঠায়।
আবার কারো বা নাচের শখ ছিল
শেষমেষ কাকুর ইচ্ছায় গান শেখা হয়।
ক্লাসের কোনোও টিচারকে দেখে করো মনে হয়
এই রকম টিচার হতে হবে।
চেহারাটা রাগী রাগী, কিন্তু পড়ানোর সময়
সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনবে।
এক ছেলের টিভির নিউস-রিডারকে দেখে
মনে হয় সে ঐ রকম সে খবর বলবে ।
সত্যি, পৃথিবীর সব খবর জেনে লোকটা
কি অবলীলায় সব ঝরঝর করে বলে যাচ্ছে।
ঐ ছেলেটি হয়ত বড় হয়ে
কোনো ফার্নিচারের দোকান করে।
ছোটোবেলায় এরকম অনেক ভাললাগাগুলো নিয়ে
সবুজ মনে অনেক কিছু হতে ইচ্ছে হয়।
পরিবেশ, আত্মীয়স্বজন, সিনেমা, টেলিভিশন
এসব শিশুদের মনে বিভিন্ন ছবি তৈরী করে।
নিজের পড়াশুনায় ভালোলাগা থেকেও
অনেক স্বপ্ন সৃষ্টি করে।
কোনোও একটি স্বপ্নকে ধরে, তাকে লালন-পালন করে
এগোলে সেটিই হয়ত তার জীবিকা হয়ে উঠতে পারে।
তারপর পরীক্ষা, রেজাল্ট,ইন্টারভিউ নানা গন্ডি পেরিয়ে
তার স্বপ্নের পথটি জীবিকায় পরিণত হয়।
জীবনের অনেকটা পথ পেরিয়ে মানুষ অবসরে
এটা নিয়ে চিন্তা করে।
কিছুক্ষণ ভেবে, কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ
এসব কিছুই না বুঝে, সে চিন্তা ছাড়ে।