-
|| নিউ ইয়র্কে টাইম স্কোয়ার ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Time Square in New York
রাত্রি দশটা, আমরা হাঁটছি
টাইম স্কোয়ারের দিকে।
লোকের ভীড়ে হাঁটছি আমরা
লোকের পিছে পিছে।
এই সময়ে এত ভীড়
মনেহয় সবাই অফিস যাত্রী।
সবাই এদিক থেকে ওদিকে যাচ্ছে
যেন জনস্রোতের রাত্রী।
একদিকে নয়, দুদিকেই যেন
মানুষের বন্যা।
কাকে দেথতে ছুটছে সবাই
কে সেই রূপসী কন্যা?
অবশেষে আমরা এলাম
নিউ ইয়র্কের টাইম স্কোয়ারে।
ঝলমলে সব আলো জ্বলছে
বিজ্ঞাপনের বাহারে।
বিরাট বিরাট এল ই ডি লাইটে
রঙবাহারি ভিডিও।
ছবি তোলার কম্পিটিশন
বাদ যাইনা আমরাও।
গাড়ী চলে, রিক্সা চলে
বাসও চলে রাস্তায়।
আজব শহর নিউ ইয়র্ক
সব শহরকে হার মানায়।
পাশে পাশে মেট্রো রেল
যেতে হবে মাটির নিচে।
সঠিক ট্রেনে যেতে হলে,
যান সঠিক সাবওয়েতে লোকের পিছে পিছে।
ট্রেনের টিকিট আড়াই ডলার
একটু হেঁটে হোটেলে।
বাসে প্রায়ই একই খরচ
একটু বেশী হাঁটা তাহলে।
উবার নিয়ে পৌঁছতে
লাগবে ডলার কুড়ি।
রিক্সা ভাড়া ডবল হলেও
নেই কোনোও হুড়োহুড়ি।
রিক্সা চেপে ফিরলাম আমরা
দৃশ্য দেখতে দেখতে।
মিনিট কুড়ি পরেই দেখি
পৌঁছে গেছি হোটেলেতে।
-
|| নিউ ইয়র্কের রাস্তায় ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
New York er Rastay
নিউ ইয়র্কে যাচ্ছি
মেয়ের গাড়ীতে চড়ে।
বিশাল বিশাল বাড়ীগুলো
ছোট ছোট রাস্তার ধারে।
হাডসন নদী পেড়িয়ে
এগিয়ে চলে গাড়ী।
ʼআমি হারব নাʼ- এই মানসিকতায়
চলছে মারামারি।
এক পাহাড় ছেড়ে অন্য পাহাড়ে
রাস্তা উঁচু নিচু।
আকাশ ছেড়ে পাতাল প্রবেশ
গাড়ীর পিছু পিছু।
দুপাশে জঙ্গলে পাহাড়ী গাছ-
মনোরম সব দৃশ্য।
এসব জায়গায় দোকান বাজার
সবই অপৃশ্য।
জায়গায় জায়গায় অনেকটা পরে
পেট্রোল পাম্প আর দোকান।
গাড়ীর খাবার, মানুষের খাবার
যা দরকার কিনে খান।
গাড়ী চলে বুকিং করা হোটেলে
জিপিএস চেনায় রাস্তা।
খোঁজ মেলেনা হোটেলের নাম
একেবারে হেনস্তা।
রাস্তায় এত জান-জট
একমুখো সব গাড়ী।
সবাই বলে ʼআমি আগে যাবʼ
গাড়ীর হুড়োহুড়ি।
এসব রাস্তা না চিনলে
গাড়ী চালানো ঝকমারী।
মেয়ে পার্কিং করে কারপার্ক স্টেশনে
উবার নিয়ে চলে।
মিনিট কয়েক পরেই আমরা
পৌঁছাই হোটেলে।
-
|| সবুজ লেখা ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Sabuj Lekha
সবুজ লেখা, সবুজ লেখা,
সবুজ লেখা কার?
সবুজ গাতার হাসির ফলে
কান্না ঝরে যার।
লাল, নীল আর সবুজ রঙে
পৃথিবী মাতোয়ারা।
কাকে ধরি আর কাকে ছাড়ি
এ যে রঙের ফোয়ারা।
খুশির সময় খলখলিয়ে
হাসির ফুল ফোটে।
সবাই জোটে একই খুশির
একই আনন্দেতে।
হাসির তোড়ে সবাই দেখে
আলোর বন্যা বয়।
লাল, গোলাপি, সাদা ফুলের
সুঘ্রাণও যে রয়।
মনখারাপির দিনে আবার
কান্নাকাটির শুরু।
একের দেখে অন্যদেরও
মেঘের গুরুগুরু।
মেঘ জমে যে শুরু হয়
অঝোরধারে বৃষ্টি।
চোখের জলে থমতমে হয়
এ কি অনাসৃষ্টি।
ছুটোছুটি মাতামাতি
শুরু যখন খেলা।
এক্কা-দোক্কা, পুতুল আর
হাজার খেলার মেলা।
ফুটবল চাই, ক্রিকেট ব্যাট চাই আর চাই
কতশত পুতুল।
ব্যাডমিন্টন খেলবে নাকি
নয় কোনোও কোঁদোল।
পড়াশুনা করতে হবে
বাবা-মায়ের কথা।
খেলা ছেড়ে পড়া কেন
মনে লাগে ব্যথা?
নিচের ক্লাস থেকে ওপরের ক্লাসে
পৌঁছুতেই যে হবে।
সবুজ ছেড়ে কিশোর মনের
বড় হওয়ার পথে।
গতকালের কিশোর মন য়ে
আজ বড় হতেই ছোটে।
তোমার দাদা-দিদির চলার রাস্তায়
নিজেকেই হাঁটতে হবে।
এমনি করে যাত্রা চলে
তোমার স্বপ্নের রাস্তা ধরে।
তুমি একদিন পৌঁছুবেই
তোমার সার্থকতার ভোরে।
-
|| মন কি বলে? ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Mon ki bole?
মন তো বলে
সব সময় ভালো কাজ করে যাও।
মনের ইচ্ছা হয়
সবারই মনগুলো ভালো করো দাও।
কিন্তু বাস্তবের ঝামেলায় পড়ে
মনের ইচ্ছামতো কাজ তো হয় না।
মন বলে, এসব কোরোনা, এসব কোরোনা,
এটাই হয় তখন মনের বায়না।
মন যখন ভাবে,
এখন একটু মজা করলে কেমন হয়।
কিন্তু অনেক সময়েই
বাস্তবিক ক্ষেত্রে উল্টোপাল্টা হয়।
মন ভাবে, আজ সকালে
মর্নিং-ওয়াকে তাড়াতাড়ি ফিরে এলে হবেনা।
কিন্তু একটু পরেই বৃষ্টি শুরু হয়
মর্নিং-ওয়াকে যাওয়াই হয়না।
এমনি করে মনের চিন্তা আর বাস্তবিক কাজে
ফারাক থেকে যায়।
এসব থেকে মনটা চুপ করে থাকলেও
সেটা যে খারাপ হয়ে যায়।
আবার অনেক সময় মনের হিসেব মতো
বাস্তবের কাজগুলো হয়।
তখন খুশিতে মন উদাসী হাওয়ায়
পাখা মেলতে চায়।
মন উল্টোপাল্টা বায়না করলে
বুদ্ধি মনকে শান্ত করে।
মনকে বুদ্ধি বোঝায়, ওই কাজের ফল ঠিক হবেনা,
তাই সে তার বায়না ছাড়িয়ে হাল ধরে।
প্রকৃতির সৌন্দর্য্য যেখানে অপার
সেখানে শিশুমন আসে ফিরে,
মন প্রকৃতির সৌন্দর্যের উপলব্ধি নিয়ে
খুশিতে ওঠে ভরে।
প্রকৃতির ব্যাপকতা দেখে
মন নিজেকে দেখে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্রের মতো।
নিজের ক্ষমতা ও শক্তিকে দেখে
ধুলোকণার ক্ষমতা যত।
নদীর স্রোত বড় বড় বোল্ডারকে
বয়ে নিয়ে যায় অবলীলায়।
স্রোতের শক্তি দেখে মন আশ্চর্য্য হয়,
প্রকৃতির অসীম ক্ষমতায়।
তবে মনটা ভালো রেখে
যে শান্তিতে জীবন নির্বাহ করে,
পৃথিবীটা তার কাছে
স্বর্গ হয়ে পরে।
-
|| খোঁজা ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Khonja
খুঁজছি তো,
কিন্তু পাচ্ছি না।
কি খুঁজছি?,
তা তো বলতে পারব না।
আসলে আমি বোধহয়
খুঁজছি নিজেকে।
সেই এত ʼআমিʼ-র মধ্যে
কোন আমি-কে চাই,
সেটাই তো
বলতে পারছি না।
ব্যাপারটা একটু পরিস্কার করে
খুলে বলি।
আমি যেটা খোঁজার জন্য
নিষ-পিষ করছি,
সেটাই কোথায় খপ করে
ধরতে পারছি?
আমি বরং মনের
ছবিগুলো দেখাই।
আসলে খোঁজার স্পীড
এত বেশী,
মন দাঁড়াচ্ছেই না
কোনোও জায়গায়।
যা দেখাচ্ছে সেগুলো
আমার পছন্দ নয়।
তাই একটা ছবি
দেখিয়েই ফুরুত।
আবার অনেক দূরের একটা ছবি
দেখিয়ে আবার ফুরুত।
আপনারা কয়েকটা ছবি
দেখলেই বুঝতে পারবেন।
কি হবে আমার
প্রবলেমের সলিউসন।
এখন যেটা দেখছি সেটা
আমি তখন প্রাইমারীতে পড়ি।
বাবাকে হেড-মাস্টারবাবু
স্কুলে ডেকেছেন।
বাবা ওনার ঘরের বাইরে
অপেক্ষা করছেন।
দেখা হতে উনি বললেন,
ʼআপনার ছেলের প্রোমোশন নিয়ে কথা বলতে চাইʼ।
ʼওর রেসপন্স ও পরীক্ষার খাতা দেখে মনে হয়েছে যেʼ
ʼওকে আমরা ক্লাস টু থেকে ক্লাস ফোরে প্রোমোট করতে চাইʼ।
বাবা এটাতে রাজী হলেন না।
বল্লেন, ʼএতে ভীত ঠিক থাকবে নাʼ,
ʼওকে ক্লাস থ্রীতেই প্রোমোট করুনʼ।
আমার ডবল প্রোমোশন পাওয়া হলো না।
এখন আবার সিধে নেপাল।
আমরা সবাই মিলে পশুপতি টেম্পলে
যাব বলে বেরিয়েছি।
রাস্তায় কি এক কারণে
আমি দলছুট হয়ে গেছি।
পশুপতি টেম্পলে ঘুড়লাম
সবাইকে ছেড়ে একা একা।
আরও কয়েকটা জায়গায় গেলাম
সেই একা একা।
হোটেলে ফিরে
আবার সকলের সাথে দেখা।
এ ছবিটা অনূপ জালোটার
গানের প্রোগ্রাম নজরুল মঞ্চতে।
বৌ, ছেলেমেয়েদের সবার সাথে
গেছি গান শুনতে।
অসাধারণ সেই সব ভজনগুলো
একের পর এক হচ্ছে।
ভাললাগার শেষ সীমায় পৌঁছে
সময়টা পার হচ্ছে।
এখন মেয়েরা তো কেউই থাকে না এখানে
দুজনেই থাকে আমেরিকাতে।
ওদের সেই ছবি দেখে মনে পড়ছে ওদের কথা
আজ রাত্রেই ভিডিও কলে দেখতে হবে ওদেরকে।
হঠাৎ এসে গেল সেই বিষাদময় ছবি
মায়ের শেষ যাত্রা।
মা নিশ্চিন্তভাবে শুয়ে আছে, সিঁথিতে চওড়া করে সিঁদুর
আর পায়ে লাল আলতা।
আমি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে,
ভাবছি মায়ের নানান কথা।
এ ছবি আমেরিকায় হলিউডে
ওয়ার্নার ব্রাদার্সের স্টুডিওতে ঘোরা।
হ্যারি পটার্সের শুটিংয়ের বিভিন্ন
জায়গাগুলোতে যাওয়া।
মেয়ের সেই ঝাঁটার পিঠে চেপে
আকাশে ওড়ার ভিডিও শুট করা।
আবার ছোটোবেলায়
সেই চোরের কান্ড বাড়ীতে।
আওযাজ শুনে আমরা
চুপিচুপি এসে দেখি,
দরজার পাশ দিয়ে সে
দরজা খুলতে চেষ্টা করছে।
এটা করতে সে
তার খানিকটা হাত ঢুকিয়েছে।
আমার সাহসী মা যখন
লাঠি দিয়ে মারলো তার হাতে।
চোর ʼওহ্ʼ বলে পালায়
এই আঘাতে।
বাস্তব ছবি হোলো
আমাকে লাঞ্চ খেতে ডাকছে।
বাধ্য হয়ে তাই মনের ছবি দেখা
বন্ধ করতেই হচ্ছে।
-
|| ছাতাটা কোথায় গেল? ||
Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Chatata Kothay Gelo
ʼছাতাটা কোথায় গেলʼ?
ʼছাতাটা দেখেছ ʼ? ʼএই তো ছিলʼ।
ʼতুমি তো ছাতাটা নাওই নিʼ, বউ বলে।
ʼএই নাও, ওটা জায়গাতেই ছিলʼ।
রমেন বাবু গজগজ করতে করতে
বাজারের দিকে হাঁটা দিলেন।
একটা মোটর বাইক পাশে এসে দাঁড়ায়।
ʼকি রে কেমন আছিসʼ?
ʼভালʼ। তুই কেমন আছিসʼ?
বন্ধু ছাতাটা রমেনবাবুর হাত থেকে নিয়ে,
খুলে আবার ধরিয়ে দিলেন।
ʼছাতা নিয়ে যাবিʼ,
ʼআবার রোদ্দুরও লাগাবিʼ,
ʼমানেটা কিʼ?
ʼহ্যাঁ, তাই তোʼ,
ʼরোদ্দুর ভালই উঠেছেʼ।
ʼবাড়ীতে তো প্রাণান্তকর অবস্হাʼ,
ʼযা গরম পড়েছেʼ।
ʼতুই কোন দিকে যাবিʼ?
ʼআমি বাজারে যাবʼ।
ʼগাড়ীতে বোসʼ
ʼবাজারের কাছে নামিয়ে দেবʼ।
রমেনবাবু ছাতাটা বন্ধ করে,
বাইকে বসলেন।
ʼবর্ষা এখনোও আসছে নাʼ
ʼবৃষ্টির দেখা নেইʼ।
বর্ষাকাল তো আসেনি বাবা,
ʼবল, বৃষ্টি নেইʼ।
ʼতুই নাম, আমি ডানদিকে যাবʼ।
রমেনবাবু বাইক থেকে নামলেন।
ʼবাইʼ, বন্ধু চলে গেল।
রমেনবাবু আরেকটু হেঁটে বাজারে পৌঁছুলেন।
ʼকুমড়ো কত করেʼ?
ʼবাবু ষাট টাকা কিলোʼ।
ʼবলিস কিʼ?
ʼষাট টাকা কিলোʼ?
ʼএক কিলো দেʼ,
ব্যাগ বাড়িয়ে সবজি নিলেন।
ʼউচ্ছে কত করেʼ?
ʼআশি টাকাʼ।
ʼএক কিলো দেʼ,
ʼএই নে একশো চল্লিশ টাকাʼ।
উচ্ছে নেবার সময়,
ছাতাটা গেল পড়ে।
আরও কিছু সবজি নিয়ে
রমেনবাবু চললেন ফিরে।
একটু পরে বাড়ী পৌঁছুলেন
মুখে এক প্রশান্তি।
ʼদেখ তোমার সব সবজি এনেছিʼ,
ʼএবার তো খুশিʼ?
ʼহ্যাঁ, সে তো হলোʼ,
ʼকিন্তু তোমার ছাতা কইʼ?
তাইতো, এত সাবধানে রাখি
তবু সেই হারিয়ে যায়।
রমেনবাবু আবার
বাজারে পৌঁছুলেন।
এক একটা সবজির দোকানে
জিজ্ঞেস করেন, ʼআমার ছাতাটা দেখেছোʼ?
ঘুরতে ঘুরতে উচ্ছেওলার কাছে দেখলেন,
ছাতাটা একপাশে পড়ে আছে।
সযত্নে ছাতাটা তুলে নিয়ে বলেন,
ʼআমি জানিই না, তোর এখানে পড়ে আছেʼ।
ছাতা মাথায় দিয়ে
বাড়ী দিকে চললেন।
এই ছাতাটা বারবার
কেন হারিয়ে যাবে?
ভাবলেন, এটাকে হাতে নয়
কোনোও ব্যাগে নিয়ে হাঁটতে হবে।