• বিদ্যাসাগরের সৃষ্টি
    Poetry

    বিদ্যাসাগরের সৃষ্টি

    Audio File:

    Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita

    জ্ঞানের সাগর বিদ্যাসাগর

                  নামেই তুমি সাগর।

    কঠোর মানুষ, কোমল হৃদয়,

                  সবাই বলে দয়ার সাগর।

    বাংলা ভাষার পথিকৃত তুমি

                   বর্ণপরিচয়ের সৃষ্টা।

    শিশু শেখে যুক্তাক্ষর আর

                 ভাল মানুষ হবার প্রচেষ্টা।

    গ্রীস দেশের জেমস্ ঈসপের

                 লেখা বিখ্যাত গল্পমালা।

    অনুবাদ করেন গর্ডন ইয়ংয়ের আগ্রহে

                 রচিত হয় কখামালা।

    ছোট ছোট আটষট্টিটি গল্প এতে

                 যা মনোগ্রাহী হয় শিশু মনে।

    নিতিগর্ভ  এ গল্পগুলি পাঠে

                সুবিধা হয় চরিত্র গঠনে।

    বিখ্যাত বিদেশী মহনুভবদের কথা

              আছে চরিতাবলী ও জীবনচরিতে।

    সাহিত্য, বিজ্ঞান ও বিভিন্ন আবিস্কারের কথা

              জানা যায় এই দুই পুস্তক দুটিতে।

    শিশুমনের বিভিন্ন প্রশ্ন যেমন পদার্থ, ঈশ্বর,

         মানব জাতি, ইন্দ্রিয়, ও ভাষার মানে।

    সম্যক পরিচয় হয় তাদের

          বোধদয় বইটিতে তারা সহজে জানে।

    এই বইটিতে আছে সহজভাবে

               সংখ্যা জেনে গুনতে শেখা।

    আবার ক্যালেন্ডারের সংখ্যা দেখে

               দিনটিকে বলতে শেখা।

    বাংলার রাজা সিরাজউদ্দৌলার শাসন,

                 মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা।

    ভারতবর্ষে মোঘলদের শাসন ও

                ইংরেজদের কাছে পরাধিনতা।

    আখ্যানমঞ্জরী তিনটি ভাগে বিভক্ত

                ছোট গল্প সংকলনটি।

    বালকেরা সামাজিক ব্যবহার শেখে

           তৈরী হতে সঠিক মানুষটি।

    এসব তিনি লিখেছেন

            বাঙ্গলার ইতিহাস পুস্তকটিতে।

    যেটির সংকলন মার্শমন সাহেবের গ্রন্থের

              শেষ নয় অধ্যায় থেকে।

    ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে হিতোপদেশ

             বই লেখার আসে আর্জি।

    বিদ্যাসাগর রচনা করেন

          এ কাজে বেতালপঞ্চবিংশতি।

    তিনি সীতার বনবাস ও বিদ্যাসাগর চরিত

                 ও শকুন্তলা,রচনা করেন।

    আর করেন এক মজার গল্প ভ্রান্তিবিলাস

     যা এক জমজ মনিব আর চাকরের উপাখ্যান।

    এছাড়া তাঁর বাল্য বিবাহের দোষ, বিধবা বিবাহ,

         বহু বিবাহ, ব্রজবিলাস ইত্যাদি রচনা আছে।

    অন্যান্য আরও নানান রচনা সম্ভারও

           বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।

    বি: দ্র: – এটি স্বাক্ষরতা প্রকাশনের বিদ্যাসাগর রচনা সংগ্রহ থেকে রচিত।

  •  বিদ্যাসাগর
    Miscellaneous

     বিদ্যাসাগর

    Audio File:

    Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita

    আজ বাংলা সাহিত্যের জনক বিদ্যাসাগরের জন্মদিন। ভারতবর্ষের শিক্ষার প্রসারে বিদ্যাসাগরের অবদান অনস্বীকার্ষ। তিনি সবসময় মানুষের পরোপকার করতেন, তাই তাকে মানুষ ʼদয়ার সাগরʼ বলে ডাকতো।  

    গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারে তিনি জন্মেছিলেন।কিন্তু সামাজিক গোঁড়ামি এবং বিভিন্ন কুসংস্কার ছেড়ে তিনি আজীবন সামাজিক কুপ্রথা যেমন বিধবা বিবাহ, মেয়েদের পড়াশুনা শেখানো ইত্যাদি ব্যাপারে চিরদিন সামাজিক প্রথা ভেঙ্গে সেইসব কাজে ব্রতী হয়েছিলেন।

    তিনি সংস্কৃত অনুরাগী ছিলেন। সংস্কৃত অধ্যাপনা ছাড়াও বেশ কিছুদিন তিনি কোলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সংস্কৃত কলেজে প্রিন্সিপ্যাল ছিলেন। বম্কিমচন্দ্রের মতে, বিদ্যাসাগর মহাশয় সংস্কৃত অনুরাগী হওয়া সত্তেও তার বাংলা ভাষা অতি সুমধুর ও মনোহর ছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থাঁর সমন্ধে বলেছেন, যারা অতীতের জড় বাধা লঙ্ঘন করে দেশকে ভবিষতের পরম সার্থকতার দিকে বহন করে নিয়ে যায়, সারথি সরূপ বিদ্যাসাগর মহাশয় সেই মহারথীগনের একজন অগ্রগন্য ছিলেন। আমার মনে এই সত্যটিই সবচেয়ে বড় হয়ে লেগেছে।

    তিনি বাংলা ভাষা শেখার প্রথম ধাপটি বর্ণপরিচয় লিখে সৃষ্টি করেছেন। যুক্তবর্ণ, বাংলা ব্যাকরণের প্রথম পাঠটিও এই বইটিতে লিখেছেন।

    এছাড়া ছোটদের কাছে ভাল এবং খারাপ মানুষ বোঝার জন্য কয়েকটি ছোট ছোট গল্পও বর্ণপরিচয়ে লিপিবদ্ধ করেছেন।

    মানুষ হিসাবে বাইরে থেকে এক কঠিন মানুষ ছিলেন. কিন্তু অন্তরে তিনি ছিলেন এক কোমল হৃদয়ের মানুষ। অপরের দুঃখ তাকে বিচলিত করতো। তাইতো কারো দুঃখ দেখলে তিনি তা দূর করতে চেষ্টা করে গেছেন আমরন।

    তিনি খুব মাতৃভক্ত ছিলেন। একবার মা তাকে গ্রামের বাড়ীতে আসতে বলেন। কিন্তু সেদিন ছুটি না পাওয়ায় চাকরিতে ইস্থাপা দিয়েই মায়ের কাছে যাত্রা করেন। সেটা ছিল বর্ষাকান। দামোদর নদী পেরিয়ে যেতে হতো গ্রামের বাড়ী।বর্ষার জলে তখন দামোদর নদী ফুঁসছে। পারাপারের কোনও নৌকাও ছিল না। তিনি সাঁতার কেটে সেদিন নদী পেরিয়ে মায়ের কাছে পৌঁছেছিলেন।

    বিদ্যাসাগর মহাশয়ের চেহাড়া অপেক্ষায় মাথাটি একটু বড় ছিল, তাই ছোটবেলায় অনেকে যশুরে কই মাছের মতো ʼকশুরে জইʼ বলে ডাকতো।

    তিনি কুসংস্কারাচ্চন্ন সমাজের অনেক কুস্ংস্কার মুক্ত করেছেন। সতীদাহ প্রথা, বিধবা বিবাহ ইত্যাদি। বিধবা বিবাহ প্রতিষ্ঠা করতে তিনি নিজের ছেলের সঙ্গে এক বালবিধবা কন্যার বিয়ে দেন।

    বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি অনেক অবদান রেখে গেছেন।

    বি: দ্র: – এটি স্বাক্ষরতা প্রকাশনের বিদ্যাসাগর রচনা সংগ্রহ থেকে অনুসৃত।

  • গণেশজীর অবয়ব
    Poetry

    গণেশজীর অবয়ব

    Audio File:

    Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita

    গণেশজীর দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলির বিভিন্ন তাৎপর্য্য আছে । সেইগুলিই বর্ণনা করার চেষ্টা করা হয়েছে এই কবিতায় ।

    ওম্ গণেশায় নমঃ ।

    ওম্ গণেশায় নমঃ ।

    ওম্ গণেশায় নমঃ ।

    গণেশজীর  দেহের

                       অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি,

    আছে তাদের বিশেষ মানে

                   আছে বিশেষ গুণাবলী ।

    শুরু করি গণেশজীর

                         বিশাল ভুঁড়িটি নিয়ে ।

    ব্রহ্মান্ড যে দর্শন হয়

                         এটির মধ্যে দিয়ে ।

    তিনি যে ভাল এবং খারাপ

                         সব কিছু খেয়ে ।

    হজম করেন সবই

                         ওই ভুঁড়িটির মধ্যে দিয়ে ।

    দুই দাঁত তাঁর প্রতীক হয়

                            ঠিক আর ভুলের ।

    অন্যভাবে বলতে গেলে

                     হয় তারা আবেগ ও বাস্তবের ।

    গণেশজীর মাথাটি বড়

                          যেমন হয় হাতির ।

    বড় চিন্তা করেন মনটি দিয়ে

                          উর্দ্ধে উঠে সংকীর্ণতার ।

    গণেশজীর ছোট্ট চোখ

                           বেশী মনোযোগী দেখতে ।

    ভবিষতটা ঠিক করতে

                         বর্তমানের সবকিছু বুঝে চলতে ।

    বড় শুঁড়ের প্রতীক

                          হলো গ্রহনযোগ্যতার ।

    সব পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিয়ে

                        কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার ।

    ছোটো মুখের প্রতীক হলো

                            কম কথা বলার ।

    কথা কম বলায়

                   শুরু হয়না অনেক ঝামেলার।

    বড় কানের প্রতীক হলো

                    সবকিছু মন দিয়ে শোনার ।

    অপ্রয়োজনীয় ব্যাপার বাদ দিয়ে

                   এগিয়ে যেতে পথে সার্থকতার ।

    গণেশজীর চারটি হাতে

                         চলে বিভিন্ন কাজ ।

    এবারে বলি এক এক করে

                        সে সব কথা আজ।

    একটি হাতে কুড়ুল আছে

               যা পুরোনো ভাল মন্দ ছেড়ে,

    বাঁচতে শেখায় যা আছে

                বর্তমানের সবকিছু ঘিরে ।

    আরেকটি হাতে পদ্ম আছে

          যা মনকে সদা জাগ্রত রাখে ।

    ওই সদা জাগ্রত মন নিয়ে মানুষ

           সার্থকতার পখে চলতে থাকে ।

    অন্য একটি হাতে গণেশজী

               আশীর্বাদ করেন বিশ্ববাসীকে ।

    তাঁর আশীর্বাদে জগতবাসীর

               মনস্কামনা পূর্ণ হয় কার্যসিদ্ধিতে ।

    চতুর্থ হাতটিতে থাকে সুতো

                     যা বস্তুবাদ ছেড়ে,

    মানুষ মোক্ষলাভের পথে

                      এগোতে পারে ।

    গণেশজীর একটি পা থাকে

                       মাটির দিকে ।

    অর্থাৎ যতই ওপরে যাও না কেন

                 মূল ভিত্তিকে যেন মনে থাকে ।

    তাঁর বাহন ইঁদুর

               যেমন সবকিছু দেয় কেটে ।

    এর প্রতীক সব অসৎ ইচ্ছা

                  ধ্বংস করে দেয় মানুষের জীবন থেকে।

  • ইচ্ছাপূর্তি – চতুর্থ পর্ব
    Poetry

    ইচ্ছাপূর্তি – চতুর্থ পর্ব

    ( এই কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প ইচ্ছাপূরণ অবলম্বনে রচিত )

    Audio File:

    Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita

    এদিকে সুশীল আগে যাত্রাগানের পালায়

               বাড়ী থেকে পালিয়ে পৌঁছে যেত ।

    সে বৃষ্টি হোক, কিম্বা রাত্রে হিম পরুক

                সে যাত্রা দেখে বাড়ী ফিরে আসত ।

    কিন্তু আজকের বুড়ো সুশীল সেই কাজ করতে গিয়ে

             কখনও বা সর্দিকাশি নিয়ে বাড়ী ফিরছে ।

    আবার কখনও গায়ে মাথায় শরীর খারাপ নিয়ে

                তিন সপ্তাহ শয্যাশায়ী হয়ে পরছে ।

    সুশীলের পুরানো অভ্যাস মতো

             পুকুরে চান করতে গেল ।

    এতে পায়ের গাঁট ফুলে

            বিষম বাতের অসুখ ধরলো ।

    সুবলচন্দ্রও কখনও ভুলে গিয়ে

           বুড়োদের সঙ্গে তাস খেলতে চলে গেল ।

    বুড়োরা তাকে দেখে বিরক্ত হয়ে

                   বল খেলতে যেতে দিল ।

    তখন সুবলচন্দ্র একান্ত মনে প্রার্থনা করলো

              আমি যেন আগের মতো বুড়ো হয়ে পরি।

    আর নিজে স্বাধীন হয়ে

                         আগের মতো চলতে পারি ।

    সুশীলচন্দ্রও জোর হাত করে প্রার্থনা করলো

                    আমি আগের মতো ছোট হতে চাই ।

    তাহলে দিনরাত বাবাকে সামলাতে হবে না

                          আর আমি খেলা করে বেড়াই ।

    ইচ্ছাঠাকরুন তাদের কাতর মিনতি

                             শুনে দর্শন দিলেন তাদের ।

    বললেন, ʼছেলের বাবা হওয়ার আর বাবার ছেলে হবারʼ

                   ʼশখ মিটেছে তোমাদেরʼ ?

    দুজনেই সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে বললো, ʼদোহাই ঠাকরুনʼ

             ʼসাধ মিটেছে আমাদেরʼ ।

    ʼতথাস্তু, কাল সকালে পুরোনো রূপে ʼ

                  দেখতে পাবে তোমরা নিজেদেরʼ ।

    পরদিন সকালে সুবলচন্দ্রকে

                           বাবা রূপে দেখা গেল ।

    আর সুশীলচন্দ্র ছেলে হয়ে

                         এক লাফে বিছানা ছেড়ে পালেয়ে গেল ।

    ʼসুশীল ব্যাকরণ মুখস্হ করবে নাʼ?

            সুবলচন্দ্র  চেঁচিয়ে ডাকলো ।

     ʼবাবা আমার বই হারিয়ে গেছেʼ ।

             সুশীল মাথা চুলকিয়ে বললো ।