Poetry
In Poetry category will have various poems will on bengali or bangla. These are based on various issues on the mordern life. This category is only bengali poetry.
-
নিউ ইয়র্কের রাস্তায় – টাইম স্কোয়ার
Audio File:
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
রাত্রি দশটায় আমরা হাঁটছি
টাইম স্কোয়ারের দিকে।
জমাট ভীড়ে হাঁটতে হচ্ছে
লোকের পিছে পিছে।
এই সময়ে এত ভীড়
যেন সবাই অফিস যাত্রী।
এদিক থেকে ওদিকে যাচ্ছে
এ এক জনস্রোতের রাত্রী।
একদিকে নয়, দুদিকেই
মানুষের সেই বন্যা।
কাকে দেখতে ছুটছে সবাই
কে সেই রূপসী কম্যা।
অবশেষে আমরা এলাম
নিউ ইয়র্কের টাইম স্কোয়ারে।
চোখ ধাঁধানো আলোর মেলা
নানান বিজ্ঞাপনের বাহারে।
বিরাট বিরাট এল ই ডি লাইট
ও রঙ বাহারি ভিডিও।
ছবি তোলার কম্পিটিসন
লেগেছে আমার মেয়েও।
গাড়ী চলে, রিক্সা চলে
বাসও চলে রাস্তায়।
আজব শহর নিউ ইয়র্ক
সব শহরকে হার মানায়।
পাশে পাশে মেট্রো রেল
যেতে হবে মাটির নিচে।
সঠিক সাবওয়ের পথ ধরে
চলুন সবার পিছে পিছে।
রিক্সা চেপে ফিরি আমরা
দৃশ্য দেখতে দেখতে।
মিনিট কুড়ি পরেই দেখি
পৌঁছে গেছি হোটেলেতে।
-
নিউ ইয়র্কের রাস্তায় – হোটেল পৌঁছানো
Audio File:
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
নিউ ইয়র্কে চলেছি
মেয়ের গাড়ীতে চড়ে।
বিশাল বিশাল বাড়ীগুলো
ছোট্ট রাস্তার ধারে।
হাডসন নদী পেরিয়ে
এগিয়ে চলে গাড়ী।
আমি হারব না – গাড়ীর স্পীডে
চলছে মারামারি।
এক পাহাড় ছেড়ে, অন্য পাহার ধরে
রাস্তা উঁচু নিচু।
আকাশ ছেড়ে পাতাল প্রবেশ
গাড়ীর পিছুপিছু।
দুপাশে জঙ্গল পাহাড়ী গাছে
মনোরম সব দৃশ্য।
এসব জায়গায় দোকান বাজার
একেবারেই অদৃশ্য।
জায়গায় জায়গায় পেট্রোল পাম্প
সঙ্গে ছোট্ট দোকান।
গাড়ীর পানীয়, মানুয়ের খাবার
যা ইচ্ছে কিনে খান।
আমরা যাচ্ছি বুক্ট হোটেলে
জি পি এস চেনায় রাস্তাটাকে।
কাছাকাছি আসে হোটেলটা
আবার হারায় সে পথটা যে।
রাস্তায় এত যান জট
একমুখো সব গাড়ী।
সবাই বলে, আমি আগে যাব
গাড়ীদের হুরোহুরি।
একটু পরেই পৌঁছে যাই
আমাদের হোটেলে।
নিউ ইয়র্কে পৌঁছে গেলাম
আমরা সবাই মিলে।
-
মা-ই তো কালী
Audio File:
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
সত্যি কথা বলতে গেলে
মা-ই তো কালী।
কেন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে
একটি ঘটনা বলি।
সেটা সতেরো শো বিরাশি
সালের একটি সময়।
বর্গীরা লুটপাট চালাতে বাঁকুরায়
সোনামুখি গ্রামে হাজির হয়।
সেই গ্রামের জঙ্গলে
পাতার ছাউনিতে এক মন্দির।
সেই মন্দিরের পূজ্যা দেবী
করাল বদনা মা কালীর।
একদিন সন্ধ্যায় এক বৃদ্ধ
সেই মন্দিরে আসেন।
হাতের প্রদীপটি জ্বলিয়ে
মাকে প্রণাম করেন।
হঠাৎ সেই জায়গায়
বর্গীর দল হাজির হয়।
সামনে মায়ের হাঁড়িকাঠে
তাদের সর্দার বৃদ্ধকে বলি দিতে যায়।
সর্দার খাঁড়াটি মাথার ওপর তুলে
কোপ মারতে উদ্যোগি হয়।
কিন্তু মায়ের আশীর্বাদে
খাঁড়াটি ওপরেই আটকে যায়।
সর্দারের মনে হয়
কেউ যেন পিছন থেকে,
তার শক্তিমান হাতটিকে
অদৃশ্যভাবে ধরে রেখেছে।
মুহুর্তের মধ্যে সর্দার
অন্ধ হয়ে যায়।
কিংকর্তব্যবিমুঢ়় হয়ে সর্দার
বৃদ্ধের কাছে ক্ষমা চায়।
বৃদ্ধ বুঝতে পারে,
এসবই মা কালীর খেলা।
সে ভাবে, এ যেন তার পুনর্জন্ম
প্রত্যক্ষ করে মায়ের লীলা।
মায়ের কৃপায় বিগলিত হয়ে
বৃদ্ধও কাঁদতে থাকে অঝোরে।
বর্গী সর্দারও সব বুঝে
বৃদ্ধের পা জড়িয়ে ধরে।
সর্দার বৃদ্ধকে বলে,
ক্ষমা করে দাও আমারে।
চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দাও
আমায় দয়া করে।
হতচকিত বৃদ্ধ মায়ের
সামনে রাখা ঘটের থেকে,
একটু জল নিয়ে
ছিটিয়ে দেয় সর্দারের চোখে।
মায়ের অমোঘ লীলায়
সর্দার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়।
সর্দার বৃদ্ধকে তার লুটের
সব ধন সম্পত্তি দিয়ে দেয়।
বৃদ্ধ তাদের লুটের ধন
নিতে অস্বীকার করে।
কোন দেবতার পূজা হয়
সর্দার জিজ্ঞেস করে।
বৃদ্ধ তাকে বলে,
এখানে আছেন মা কালী।
সর্দার বলে, তাই তো ইনি মায়ের মতো
সত্যিই মা-ই তো কালী।
এটি শ্রী দূর্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের লেখা থেকে সংকলিত।
-
মা দূর্গার সন্ধীপূজো
Audio File:
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
মা দূর্গার ‘সন্ধীপুজো’ কথাটি
অসুরের সঙ্গে সন্ধী করার সম্পর্কিত নয়।
মা অসুরের সঙ্গে ন’দিন যুদ্ধ করে
তাকে পরাস্ত করেই যুদ্ধ শেষ হয়।
আসলে এ নামটি এসেছে
দুটি তিথির সংযোগ সময়ে।
মহাষ্টমীর শেষ চব্বিশ মিনিট
আর মহানবমীর প্রথম চব্বিশ মিনিট নিয়ে।
এই আটচল্লিশ মিনিট
মায়ের সন্ধীপুজোর ক্ষণ।
বিশেষ এই সময়ে
মায়ের হাতে অসুর বধ হন।
এই সল্প সময়ে পুরোহিত মশাইকে
ষোড়শোপচারে পুজো করতে হয়।
এছাড়া মায়ের বলিদান ও
একশো আটটি দীপমালায় আরতি হয়।
এই ষোড়শ উপাচারে পুজোতে
মাকে প্রথমে আহ্বান করা হয়।
পা ধোয়ার জল,
হাত মুখ ধোওয়ার জল দেওয়া হয়।
ঘরেতে আসন দেওয়া হয়
মাকে বসতে।
মায়ের স্নানের পরে
বসন ও আভরণ দেওয়া হয় মাকে।
এই প্রচারে মধু, সুগন্ধি
ধূপ, দীপ ও চন্দন লাগে।
এছাড়া বিভিন্ন নৈবেদ্য
উৎসর্গ করা হয় মাকে।
সন্ধীপুজোতে চামুন্ডা রূপে
আহ্বান করা হয় মাকে।
মায়ের এই নামটি এসেছে
মায়ের চন্ড ও মুন্ডকে বধ করা থেকে।
দেবী দূর্গা তাঁর তৃতীয় নয়ন থেকে
মা কালী ব চন্ডিকাকে সৃষ্টি করেন।
সেই মা চন্ডিকাই
অসুরকে দলন করেন।
মা প্রথম বধ করে ছিলেন
চন্ড ও মুন্ডকে।
তারপরে মা বধ করেন
শুম্ভ ও নিশুম্ভকে।
পুরানের অন্য মতে, দেবী
বধ করেন মহিশাষুরকে।
অকাল বোধনে দেবীর কৃপায়
রামচন্দ্র বধ করেন রাবণকে।
ষোড়শ পূজার শেষে
মায়ের বলিদান হয়।
বলিদানে নিজের সম্পদ বা পোষ্যকে
মাকে অর্পণ করা হয়।
এরপর মায়ের আরতি হয়
একশো আটটি দীপে ও কর্পুর দীপে।
জলশঙ্খ, পদ্মফুল, কাপড়
ও চামড় লাগে আরতিতে।
পূজা শেষে ভক্তরা
মাকে পুস্পা্জলী দেয়।
প্রর্থনা করে, শক্তি, শান্তি
দীর্ঘায়ু ও দেহের আরোগ্য কামনায়।
-
দূর্গাপুজো
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
আশ্বিন মাসে দেবীপক্ষ আসে
মহালয়ার পরদিন থেকে।
ভারতবর্ষের মানুষের মন
আনন্দেতে নাচতে থাকে।
বৎসরান্তে দূর্গামা সপরিবারে
আসেন এই মর্ত্যধামে।
বহু মানুষের রোজগার হয়
পুজোয় বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে।
মায়ের সাথে আসেন
মেয়েরা মা লক্ষ্মী আর মা সরস্বতী।
সঙ্গে দেব সেনাপতি কার্তিক
আর সিদ্ধিদাতা গনপতি।
সব দেব দেবীর সঙ্গে
আসে তাদের বাহনেরা।
সিংহ, পেঁচা, হাঁসের সঙ্গে
আসে ইঁদুর আর ময়ুরেরা।
মায়ের আশীর্বাদে মহিষাসুরও আসে
সঙ্গে নিয়ে মহিষটিকে।
সবাই যে পুজো নেয়
মর্তবাসীর কাছ থেকে।
মা দূর্গার পুজো শুরু হয়
দেবীপক্ষের মহাষষ্টিতে।
এদিন পুজোর কন্পারম্ভ হয়
বোধনের কার্ষটিতে।
মায়ের নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে
প্রতিষ্ঠা হয় নবপত্রিকা মহাসপ্তমীতে।
তারপরে দেবীর ঘট স্থাপন, দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা,
দেবীর চক্ষুদান হয় একে একে।
মহাসপ্তমীর পরেরদিন
শুরু হয় মায়ের পুজো মহাষ্টমীতে।
মায়ের কাছে ভক্তদের ভীড়
লেগে যায় মাকে অন্জলী দিতে।
মহাষ্টমী ও মহানবমীর সংযোগ সময়ে যে
বিশেষ পুজোটি হয় সেটি সন্ধিপুজোর ক্ষন।
পুরানের কাহিনি মতে এই সময়টিতেই
মহিষাসুর মা দূর্গার হাতে বধ হন।
মহাষ্টমীর পরদিন মায়ের
মহানবমী পুজো শুরু হয় ।
এদিন রাত্রে মায়ের যাবার কথা ভেবে
ভক্তদের মন খারাপ আরম্ভ হয়।
রাত পোহালেই মায়র
বিদায়ের ঘন্টা বেজে যাবে।
এ চিন্তায় ভক্তরা মনমরা,
কাতর হয়ে থাকে।
মহানবমীর পরেরদিন মায়ের
মহাদশমী পুজো শুরু হয়।
মাকে দধিকর্মা খাইয়ে
মাকে বিসর্জন দেওয়া হয়।
ছলছল চোখে সবাই পরের বছর
মাকে তাড়াতাড়ি আসতে বলে।
সন্ধ্যেবেলায় শোভাযাত্রা করে
মায়ের প্রতিমা নিরন্জন হয় জলে।
কলকাতার দূর্গাপুজো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তখমায়
কলকাতাকে অলংকৃত করেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন মানুষ তাই
ছুটে আসে এই উৎসবে সামিল হতে।
-
নবরাত্রী
Audio File:
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
মাযের পুজোর দশটি দিন
তাই নয়টা আছে রাত্রী।
এ সময়ে দেবীর নʼটি রূপের পুজো হয়
এ পুজোকে বলে নবরাত্রী।
আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে
প্রতিপদে এই পুজো হয়।
মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদে
দেবীর ঘট প্রতিষ্ঠা হয়।
পুরান মতে, দশদিন নয় রাত্রী
লাগে ছিল দেবীর মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধের।
অবশেষে অষ্টম-নবম দিনের সন্ধিক্ষনে
মহিষাসুরকে বধ করে জয় হয় দেবীর।
ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে
অনেকেই নবরাত্রীর ব্রত পালন করেন।
নিয়ম মতো এই নয়দিন ফলাহারে থেকে
মন দিয়ে দেবীর পুজো করেন।
প্রতিপদে মায়ের শৈল্যপুত্রী রূপের পুজো করা হয়
মায়ের ঘট স্থাপনের মধ্যে দিয়ে।
তিনি পাহাড়ের কন্যা, তাঁর শক্তি
ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের সন্মিলিত শক্তি নিয়ে।
দ্বিতীয়াতে মায়ের পুজো হয়
মায়ের ব্রহ্মচারিণী রূপেতে।
দেবী ব্রহ্মচারিণী শ্বেত পোষাক পরিহিতা
আর জপমালা ও কমন্ডলু থাকে দুই হাতে।
নবরাত্রী পুজোয় তৃতীযাতে
মা চন্দ্রঘন্টা পূজিত হন।
বিশাল চন্দ্রসম দেবী একটি ঘন্টা বাজিয়ে
সব দৈত্য বিতারন করেন।
চতুর্থীতে দেবী কুষ্মান্ডার পুজো হয়
ইনি অষ্টভুজা সিংহ বাহনে থাকেন।
কুষ্মা শব্দের অর্থ ত্রিতাপ বা দুঃখ
তিনি ত্রিতাপহারিণী,সন্তানদের রক্ষা করেন।
পঞ্চমীতে দেবী স্কন্দমাতা রূপে পূজিত হন
কার্তিকের অন্য নাম স্কন্দ,স্কন্দ তাঁর কোলে থাকে।
স্কন্দের মাতার চার বাহু, ত্রিনেত্র ও সিংহ বাহনে থাকেন,
তাঁর একটি হাতে অভয় মুদ্রা আরেক হাতে পদ্ম ফুল থাকে।
ষষ্ঠিতে দেবী আসেন মা কাত্যায়নীর রূপ ধরে
মা কাত্যায়নী ঋষি কাত্যায়নের কন্যা।
তিনি মহাশক্তির একটি ভিষণা রূপ
তাঁর গাত্র মা দূর্গার মতো লাল বর্ণা।
সপ্তমীতে দেবীকে পুজো করা হয়
দেবী ভিষণদর্শণা কালরাত্রী রূপে।
তাঁর গায়ের রং অন্ধকারের মতো কালো
তিনি দুষ্টের দমন করেন ভক্তদের থেকে।
অষ্টমীতে দেবীর পুজো হয়
মা মহাগৌরীর রূপেতে।
মা ভক্তদের সমস্ত ইচ্ছা পূর্ণ করেন
মহাদেবের ত্রিশুল ও ডমরু তাঁর হাতে থাকে।
নবমীতে মা আসেন
মা সিদ্ধিদাত্রীর রূপেতে।
ভক্তরা মাকে ভক্তিভরে পুজো করেন
অষ্টসিদ্ধির আশাতে।
মা কৈলাশের পথ ধরেন
পুজো শেষে দশমীতে।
ভক্তরা মাকে বিদায় দেয়
পরের বছর মায়ের পুজোর আশা রেখে।