-
|| পথের পাঁচালী – অপূ ও দূর্গা – ২ ||
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Pather Panchali – Apu o Durga 2
অপুর বাবা বৈশাখ মাসের প্রথমে
গ্রামের বাড়ী ছেড়ে কাশী যাবার ঠিক করলো।
সব জিনিস নেওয়া যাবে না
তাই বাকী জিনিস বিক্রির ব্যবস্হা হলো।
গ্রামের একজন অপুকে বলে, ʼতুই যে বলিস, এই গ্রামের মতো
এমন নদী, এমন মাঠ কোখাও পাইনি।
অপু বলে, ʼআমি কি করব, আমি তো গ্রাম ছেড়ে যেতে চাইনিʼ।
অনেকদিন আগে সে আর দিদি
বাছুর খুঁজতে রেল লাইন দেখতে পায়।
সেদিন ওরা রেল লাইন দেখতে
মাঠের জল ভেঙ্গে ছুটে যায়।
আজ দিদি নেই, সে মারা ঘেছে
কিন্তু অপু পথে, ঘাটে, বাঁশবনে, বাড়ীতে দিদির স্পর্শ পায়।
দিদির সঙ্গে সত্যিই কি তার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল?
দিদিকে কেউ ভালবাসতো না।
অপুর মন এক বিচিত্র অনুভূতিতে ভরে যায়।
সেটা দুঃখ, শোক, বিরহ নয়, কি সে জানে না।
তরগর মনে মনে বললো,
আমি যাইনি দিদি, আমি তোকে ভুলিনি।
ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে
আমি সত্যিই যেতে চাইনি।
বিঃ দ্রঃ – এটি শ্রী বিভূতিভূযন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী থেকে অনুসৃত।
-
||পথের পাঁচালী – অপু ও দূর্গা – ১ ||
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
Pather Panchali – Apu o Durga
(১)
অপুর বাড়ীর সামনে
একটি অশত্থ গাছ দেখা যায়।
জানলা দিয়ে গাছ দেখতে
অনেক দূরে মন চলে যায়।
মায়ের কাছে গল্পে, সেই সব দূরের দেশের
রাজপুত্রদের কথা সে শুনেছে।
ভাবতে ভাবতে চোখে পড়ে
আকাশে একটা চিল উড়ছে।
দেখতে দেখতে চিল চলে যায়
চোখের অগোচরে।
চিলের অন্তর্ধানে মনখারাপ হয় অপুর
ছুটে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে সে।
মা তখন ব্যস্ত রান্নাতে,
বলে, ʼতোর জন্যে চিংড়ি মাছ ভাজা করছি যেʼ।
(২)
অপু একদিন জানলার ধারে বসে রোদ মাখানো
শেওড়া-ঘেটূ বনের দিকে তাকিয়ে আছে।
মায়ের কাছে সে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের
গল্প শুনেছে।
মা যখন যুদ্ধের বিভিন্ন ঘটনাগুলো
বর্ণনা করে,
তখন সে তন্ময় হয়ে যায়,
মন দিয়ে তা শোনে।
মহাভারতের কর্ণের ওপর
তার খুব মায়া হয়।
রথের চাকা মাটিতে বসে গেছে
কর্ণ নিরস্ত্র অসহায়।
বিপন্ন কর্ণের অনুরোধ উপেক্ষা করে
অর্জুন তীর ছুড়ে কর্ণকে বধ করে।
এ ঘটনা শুনে তার চোখ জলে ভরে ওঠে,
চোখ ছাপিয়ে তুলতুলে গাল বেয়ে জল পড়ে।
(৩)
দিদি অপুকে বলে
ʼচড়ুইভাতি করবিʼ?
পাড়ার সকলে কুলুইচন্ডির ব্রতে
বনভোজন করে।
সবাই চাল, ডাল, ঘি, দুধ
নিয়ে আসে জোগাড় করে।
দিদি ও ভাই তাদের রান্নাঘর থেকে আনে
খানিকটা চাল, একটা বেগুন আর দু-পলা তেল।
আরেক বন্ধু বিনি ওদের সঙ্গে
এসে মিলিত হয়।
বিনি কয়েকটা শুকনো কাঠ
এনে দেয়।
দূর্গা ভাত বসায় তিন জনের জন্য
আর বেগুনটা ভাজে তেল দিয়ে।
জোগার করা কয়েকটি আলুও
ভাতের সঙ্গে সেদ্দ করে।
জঙ্গলের মধ্যে বসে কলাপাতায় ভাত
, আলুসেদ্দ আর বেগুন ভাজা বাড়ে।
পরিতৃপ্তি করে তিনজনে
বনভোজন সাড়ে।
বিঃ দ্রঃ – এটি শ্রী বিভূতিভূযন বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত পথের পাঁচালী থেকে অনুসৃত।