-
ইচ্ছাপূর্তি – চতুর্থ পর্ব
( এই কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প ইচ্ছাপূরণ অবলম্বনে রচিত )
Audio File:
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
এদিকে সুশীল আগে যাত্রাগানের পালায়
বাড়ী থেকে পালিয়ে পৌঁছে যেত ।
সে বৃষ্টি হোক, কিম্বা রাত্রে হিম পরুক
সে যাত্রা দেখে বাড়ী ফিরে আসত ।
কিন্তু আজকের বুড়ো সুশীল সেই কাজ করতে গিয়ে
কখনও বা সর্দিকাশি নিয়ে বাড়ী ফিরছে ।
আবার কখনও গায়ে মাথায় শরীর খারাপ নিয়ে
তিন সপ্তাহ শয্যাশায়ী হয়ে পরছে ।
সুশীলের পুরানো অভ্যাস মতো
পুকুরে চান করতে গেল ।
এতে পায়ের গাঁট ফুলে
বিষম বাতের অসুখ ধরলো ।
সুবলচন্দ্রও কখনও ভুলে গিয়ে
বুড়োদের সঙ্গে তাস খেলতে চলে গেল ।
বুড়োরা তাকে দেখে বিরক্ত হয়ে
বল খেলতে যেতে দিল ।
তখন সুবলচন্দ্র একান্ত মনে প্রার্থনা করলো
আমি যেন আগের মতো বুড়ো হয়ে পরি।
আর নিজে স্বাধীন হয়ে
আগের মতো চলতে পারি ।
সুশীলচন্দ্রও জোর হাত করে প্রার্থনা করলো
আমি আগের মতো ছোট হতে চাই ।
তাহলে দিনরাত বাবাকে সামলাতে হবে না
আর আমি খেলা করে বেড়াই ।
ইচ্ছাঠাকরুন তাদের কাতর মিনতি
শুনে দর্শন দিলেন তাদের ।
বললেন, ʼছেলের বাবা হওয়ার আর বাবার ছেলে হবারʼ
ʼশখ মিটেছে তোমাদেরʼ ?
দুজনেই সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে বললো, ʼদোহাই ঠাকরুনʼ
ʼসাধ মিটেছে আমাদেরʼ ।
ʼতথাস্তু, কাল সকালে পুরোনো রূপে ʼ
দেখতে পাবে তোমরা নিজেদেরʼ ।
পরদিন সকালে সুবলচন্দ্রকে
বাবা রূপে দেখা গেল ।
আর সুশীলচন্দ্র ছেলে হয়ে
এক লাফে বিছানা ছেড়ে পালেয়ে গেল ।
ʼসুশীল ব্যাকরণ মুখস্হ করবে নাʼ?
সুবলচন্দ্র চেঁচিয়ে ডাকলো ।
ʼবাবা আমার বই হারিয়ে গেছেʼ ।
সুশীল মাথা চুলকিয়ে বললো ।
-
ইচ্ছাপূর্তি – তৃতীয় পর্ব
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
( এই কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প ইচ্ছাপূরণ অবলম্বনে রচিত )
সুশীল গাছ থেকে পড়ে মাজায়
খুব ব্যথা হয়ে গেছে, পিঠেও ধরেছে টান ।
দাওয়ায় মাদুরে বসে সে চাকরকে হুকুম করলো,
ʼবাজার থেকে একশো টাকার লজেন্চুস কিনে আনʼ।
একশো টাকায় একরাশ লজেন্চুস পেয়ে
কয়েকটি দন্তহীন মুখে পুরলো ।
বাকীগুলো ভাবলো ছেলেকে দেবার কথা
কিন্তু এতে শরীর খারাপ হতে পারে, পরে মনে হলো ।
সুবলচন্দ্র আগে ভাবছিল ছোটবেলা ফিরে পেলে
সে দিনরাত করবে পড়াশুনা ।
কিন্তু নতুন ছেলেবেলা পেয়ে
সে আর স্কুলমুখো হতে চায় না ।
সুশীল রাগ করে এসে বলে,
ʼবাবা স্কুলে যাবে না ʼ ?
সুবল মাথা চুলকিয়ে বলে,
ʼপেট কামড়াচ্ছে, স্কুলে যেতে পারব নাʼ।
সুশীল চেঁচিয়ে বলে, ʼপারবে না বৈকিʼ,
এমন অনেক পেট ব্যথা আমার হয়েছে , আমি সব জানি ।
সুবল কাঁচুমাঁচু হয়ে তাকিয়ে থাকে,
মনে মনে ভাবে এ কথাগুলো আমি মানি ।
সুশীল এতরকম ভাবে স্কুল থেকে পালাত
তা তার সব মনে মনে ভাবলো ।
তাই বাবাকে রোজ স্কুলে পাঠাতে শুরু করলো
আর স্কুল থেকে পালানোর রাস্তা সব বন্ধ করলো ।
সুশীলের বড়ই কড়াকড়ি ছিল
খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে ।
কারন সে যখন ছোটো ছিল, তার প্রায়ই
অম্বল হতো উল্টোপাল্টা খাবারে ।
তাই সুশীল বাবাকে কম খেতে দিত
যেন তার অম্বল না হয় ।
কিন্তু ছোটবয়সি বাবার
সেই খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যায় ।
এতে ছোটবয়সি সুবলচন্দ্র রোগা হয়ে
তার হাড় জিবজিরে চেহাড়া হয়ে গেল ।
সুশীল শক্ত অসুখ করেছে ভেবে
গাদাগাদা অসুধ খাওয়াতে শুরু করলো ।
-
ইচ্ছাপূর্তি – প্রথম পর্ব
( এই কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প ইচ্ছাপূরণ অবলম্বনে রচিত )
Audio File:
Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita
সুশীলচন্দ্র ছিল সুবলচন্দ্রবাবুর
সন্তান একমাত্র ।
নাম অনুযায়ী ছেলেটির
সুশীল স্বভাব ছিল না বিন্দুমাত্র ।
আকছাড় নানান মানুষের
অভিযোগ আসত যখন তখন ।
সামলাতে সুবল বাবুর
প্রাণান্তকর অবস্হা সর্বক্ষণ ।
একদিন হঠাৎ সুশীলের
স্কুলে না যাবার ইচ্ছা ।
স্কুলে আজ ভূগোল পরীক্ষা
এ ছাড়া বোস বাড়ীতে বাজী পোরানোর মজা ।
সবটা চিন্তা করে সে
বিছনায় পরলো শুয়ে ।
তার নাকি দারুন পেট ব্যথা
কি করে বেরোবে এই কষ্ট নিয়ে ।
বাবা সবটা বুঝতে পেরে
পাঁচন নিয়ে হাজির হলো ।
পাঁচনের নাম শুনে
সুশীলের পেট ব্যথা উড়ে গেল ।
বাবা বললো, তোমার পেটব্যথা
তুমি শুয়ে থাক চুপটি করে ।
পাঁচন খাইয়ে বাবা চলে গেল
ঘরের দরজা বন্ধ করে ।
সুশীল কাঁদতে কাঁদতে
একটি কথা মনে মনে ভাবে ।
কাল যদি আমি বাবা হয়ে যাই
সে ইচ্ছামতো সব কাজ করতে পারবে ।
এদিকে বাবা সুবলবাবু ভাবতে থাকেন
তার ছেলেবেলার কথা ।
বাবা- মাযের আদরে তার
পড়াশুনা না হবার ব্যথা ।
তিনি ভাবেন যদি ছেলের মতো
আবার স্কুলে যেতে পারে।
ভাল পড়াশুনা করে
মনের ব্যথাটা সারাতে পারে ।
ইচ্ছা পূরণের দেবী
ইচ্ছা ঠাকরুন সবটা শুনতে পেলেন ।
বাবা ও ছেলের মনস্কামনা শুনে
তা পূরণ করার কথা ভাবলেন ।








