• গৌতম বুদ্ধের জীবন ও শিক্ষা
    Miscellaneous

    গৌতম বুদ্ধের জীবন ও শিক্ষা

    Please Visit & Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita

    গৌতম বুদ্ধ বৌদ্ধধর্মের ২৮ তম বুদ্ধ। যাঁর তত্ব অনুসারে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তিত হয়। তিনি খ্রীষ্টপূর্ব ৬২৫ সালে প্রাচীন ভারতের পূর্বাঞ্চলে জীবিত ছিলেন। মগধ সাম্রাজ্যের শাসক বিম্বিসারের রাজত্বকালে তিনি শিক্ষাদান করেছিলেন। তাঁর প্রধান দুই শিষ্য ছিল সারিপুত্র ও মৌদগল্যায়ন।

    গৌতম বুদ্ধ ভোগবাসনা ছেড়ে কঠোর তপস্যার শিক্ষা দিয়েছিলেন। তিনি মিথ্যাচার, অজ্ঞানতা,জীবনের নানানল কষ্ট থেকে মুক্তি লাভ করে পরম সুখ নির্বানের পথ দেখিয়েছিলেন।

    তাঁর প্রথম জীবনে স্ত্রী ছিলেন যশোধরা ও পুত্র ছিল রাহুল। থাংর পিতা ছিলেন রাজা শুদ্ধোধন ও মাত ছিলেন মায়াদেবী। পরবর্তীকালে তিনি গৃহত্যাগ করে সন্ন্যাসী হন ও ক্রমে বুদ্ধত্ব প্রাপ্ত করেন।

    তাঁর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নাম ছিল। যেমন ভারতবর্ষে তিনি সিদ্ধার্থ, গৌতম, শাক্যমুনি বুদ্ধ, শাক্যসিংহ ইত্যাদি নামে পরিচিত।

    চীনদেশে তাঁর নাম দেখান। থাইল্যান্ডে তাঁর নাম থাই. কোরিয়াতে তাঁর নাম হাঙ্গুল বা দেখান। তাঁর জাপানী নাম কান্জি, হিরাগানা বা দেখান।বাংলায় ওনার নাম গৌতম বুদ্ধ। ওনার বংশিয় নামের অর্থ গোতমার বংশধর। এই গোতমার অর্থ যার কাছে সবচেয়ে বেশী আলো আছে।

    গৌতম বুদ্ধের কিছু আধ্যাত্বিক গুণাবলী আছে, তার কয়েকটি হলো –

    ১) সম্সম বুদ্ধ অর্থাৎ পুরোপুরি স্ব-জাগ্রত।

    ২) ভিজ্জা কারনা সম্পন্ন অর্থাৎ উচ্চতর জ্ঞান ও আদর্শ আচরন সমৃদ্ধ।

    ৩) সুগত অর্থাৎ ভাল গেছে বা ভাল কথা বলা।

    ৪) লোকভিদু অর্থাৎ বহু জগতের জ্ঞানী।

    ৫) অনুত্তরো পুরীসা দক্ষ সারথি অর্থাৎ অপ্রশিক্ষিত লোকেদের দক্ষ প্রশিক্ষক।

    ৬) সত্থদেব মনুসানা অর্থাৎ দেবতা বা মানুষের শিক্ষক।

    ৭) ভাগবতো অর্থাৎ ধন্য এক।

    ৮) অরহং অর্থাৎ শ্রদ্ধার যোগ্য।

    ৯) জিনা ল অর্থাৎ বিজয়ী।

    প্রথম জীবনে সিদ্ধার্থের মা মায়াদেবী স্বামীর সঙ্গে পিতৃগৃহে যাবার সময় নেপালের তরাই অঞ্চলে মধ্যে অবস্থিত একটি গ্রাম লুম্বিনীতে এক শালগাছের তলায় এক পুত্রের জন্ম দেন। ঐ জন্মের সাতদিন পরে মায়াদেবীর মৃত্যু হয়।

    শুদ্ধোধন আটজন ব্রাহ্মণকে আমন্ত্রণ করেন ছেলের নামকরনের জন্য। তাদের দেওয়া নাম হয় সিদ্ধার্থ। সিদ্ধার্থ কথার অর্থ যিনি সিদ্ধিলাভ করেছেন।

    সিদ্ধার্থের সংসারের প্রতি কোনও টান ছিল না। সংসারে মনোযোগী করার জন্য ষোলবছর বয়েসে পিতা এক সুন্দরী কন্যার সাথে বিবাহ দেন। কিছুদিন পরে তাদের রাহুল নামে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। সিদ্ধার্থ তার উনত্রিশ বয়েস পর্যন্ত রাজপুত্রের জীবন ধারন করেন। তারপর তাঁর মনে হয়, ভোগ বিলাসিতা, ঐশ্বর্য্য জীবনের লক্ষ হতে পারে না।

    তিনি প্রাসাদ থেকে বাইরে বেড়িয়ে মানুষের জীবনের সমন্ধে সম্যক ধারনা করেন। তিনি বোঝেন যে কোনও মানুষ ক্রমশঃ শক্তিহীন হয়ে বৃদ্ধ অবস্থায় পৌঁছবে ও একদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে। তিনি জরা, ব্যাধি ও মৃতুকে জয় করতে চেয়েছিলেন। এজন্য তিনি এই চিন্তায় ডুবে যান।

    শেষপর্যন্ত তিনি গৃহত্যাগ করে সন্নাসীর জীবন যাপনের সিদ্ধান্ত নেন। তাই একদিন গভীর রাত্রে তিনি পিতা, স্ত্রী ও পুত্রকে ফেলে গৃহত্যাগ করেন। তিনি রাজবস্ত্র, গহনা এমনকি তাঁর লম্বা চুল কেটে মুন্ডিতমস্তক হন।

    প্রথমে তিনি যান আলার কালাম নামে এক সন্ন্যাসীর কাছে যোগশিক্ষার জন্য। পরে তিনি উদ্দক বামপুত্র নামে আরেক সন্ন্যাসীর কাছে যোগশিক্ষা করেন। কিন্তু উভয়কেই তিনি জরা, ব্যাধি ও মৃত্যুর কবল থেকে মুক্তির পথ জানতে চেয়ে কোনও সদুত্তর পাননি। তাই ওদের ছেড়ে নিজেই সেই পথের অন্বেসনে বুদ্ধগয়ার উরুবিল্ব নামে এক সুন্দর স্থানে যান।

    শরীরকে অপরিসীম কষ্ট প্রদানেই সেই কাঙ্খিত পথ পাওয়া যায় – এই বিশ্বাসে তিনি কঠোর সাধনায় মনোনিবেশ করেন। দীর্ঘকাল ্নশন ও শারীরিক নিপীরনে থাঁর শরীর অস্থিমজ্জাসার ঙয়ে পড়ে। থখন তিনি অনুভব করেন যে এইভাবে দূর্বল শরীরে বোধিলাভ সম্ভব নয়। তাই তিনি স্থানীয় এক কন্যার কাছ থেকে পরমান্ন গ্রহন করেন। তারপর তিনি বোধিলাভ না হওয়া অবধি সেই স্থান পরিত্যাগ করবেন না – এই প্রতিজ্ঞা করেন ও উনপঞ্চাশদিন ধ্যান করার পরে তিনি বোধিপ্রাপ্ত হন।

    বুদ্ধের আটটি শিক্ষা মার্গ হলো –

    সঠিক বোঝাপড়া

    সঠিক চিন্তা

    সঠিক বক্তিৃতা

    সঠিক কর্ম

    সঠিক জীবিকা

    সঠিক প্রচেষ্টা

    সঠিক মননশীলতা

    সঠিক একাগ্রতা

    বৌদ্ধধর্মের চূরান্ত লক্ষ হলো আলোকিত হওয়া ও নির্বাণে পৌঁছানো|
    নির্বাণ মৃত্যু ও পুনঃজন্ম চক্রের পরিসমাপ্তি নির্দেশ করে|

    বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি|

    ধম্মম শরণং গচ্ছামি|

    সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি|

    বুদ্ধদেবকে প্রণাম জানাই|