• || এক কিশোরের চোখে গ্রাম ||
    Poetry

    || এক কিশোরের চোখে গ্রাম ||

    Please Subscribe my Youtube Channel : Keleedas Kobita

    Ek Kishorer Chokhe Gram

    শহরের ছেলে বিলু

              গ্রাম দেখেনি বড় একটা।

    হঠাৎ যায় সে বাবার সাথে

            দেখতে বাবার মামার বাড়ীর গ্রামটা।

    শহরের লোক গ্রামে এসেছে

               এতো বিরাট বড় খবর।

    আলাপ করতে আসে অনেক লোক

            সব হোমরা চোমরা তাবড় তাবড়।

    খুব মজা পায় এসব দেখে

            এত খাতির শহরের লোকের?

    বাড়ীর একজন দেয় আমাদের

            নানান নাড়ু আর খেজুর।

    বিরাট উঠোন বাড়ীর সামনে

              বিরাট বড় রোয়াকটাও।

    চারিদিকে নানান জিনিষ,

              বুঝতে পারছে না সে কোনোটাও।

    সামনে দেখে গোলাকৃতি

      ছোট্ট একটা ঘর আর ছাউনি খড়ের।

    নাম তার গোলা,

             মজুত হয় সেখানে ধানের।

    দূরে একটা ঘরে দেখে,

            গরুরা খাচ্ছে কিন্‌তু খুঁটিতে বাঁধা।

    সেই ঘরের নাম গোয়াল,

        সেখানে গোবরের পাহাড় কেন, জানেনা সে তা।

    রান্নাঘরে দু-তিনটে মেয়ে

                দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি যেন করছে।

    সামনে বসা আরও দুজন

                 হাত দিয়ে ধান সরাচ্ছে।

    পরে শুনলো এর নাম ঢেঁকি,

             এটা সবই মিলে চালাচ্ছে।

    মেয়েগুলো ভারী ঢেঁকিকে

        একবার ওপরে তুলছে আবার নামাচ্ছে।

    অন্য দুজন বসা মেয়ে

         একটা ছোট্ট গর্তে ধান ভরে দিচ্ছে।

    ঢেঁকির এদিকে একটা কাঠের মুগুর

        ধানের ওপর পড়ে, খোসা ছাড়িয়ে চাল করছে।

    এই ভাবে ঢেঁকি দিয়ে

          ধান থেকে চাল তৈরী হচ্ছে।

    রান্নাঘরের সবকʼটি উনুনই

                              তৈরী মাটি দিয়ে।

    সেখানে রান্না হচ্ছে

                 ঘুঁটে আর পাট-কাঠি পুড়িয়ে।

    তাই সেখানে দাঁড়ানোর উপায় নেই

                             ভীষন চোখ জ্বালা করে।

    রান্নাঘরের এই ধোঁয়ার জন্য

                           দেয়ালেও কালি পরে।

    বাবা হঠাৎ বিলুকে ডাকে,

                    ʼচল বিলু মাছ নিয়ে আসিʼ।

    সামনের পুকুরে মাছ ধরেছে

            সেই মাছের ভাগ আনতে হবে।

    আজব সেই ভাগ,

             মুখে সবাই চার আনা, আট আনা বলে,

    আর মাছগুলো ওজন করে

                                 ভাগ করে যাচ্ছে।

    যে কাকুটা ওজন করছিল,

                                         সে বল্ল,

     ʼবিলুবাবুর জন্য এ মাছটা আলাদাʼ।

              মাছটা বাবার হাতে দিয়ে দিল।

    পরে বাবার কাছে বিলু বুঝেছিল যে

           পুরো পুকুরটাকে যদি এক টাকা ধরা হয়,

    তাহলে, যেহেতু ষোল আনায় এক টাকা,

      আট আনা ভাগ মানে পুকুরের আদ্দেক মালিকানা হয়।

    সেই হিসেবে প্রোপোরসনেটলি

                                মাছেরও ভাগ হয়।

    ফেরার দিনে সকাল থেকে

                            বৃষ্টি হচ্ছে মুষলধারে।

    মেটো রাস্তা, চারিদিকে কাদা

                          তারা যাবে কেমন করে?

    স্টেশনে  যাবার অটো, টোটো

                              সব বন্ধ হয়ে গেছে।

    বাধ্য হয়ে গরুর গাড়ীর

                              ব্যবস্থা হয়েছে।

    বিলুর অনেক দিনের শখ

                            গরুর গাড়ীতে চড়ার।

    তাই সে খুব খুশি

                            নিজের শখ মেটার।

    দুটো গরুর কাঁধে একটা বাঁশ দিয়ে

                   একটা কাঠের গাড়ী বাঁধা রয়েছে।

    ওপরে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে

                    একটা ছাউনি করা হয়েছে।

    কাদা মাটির রাস্তা পেরিয়ে

                    গরুর গাড়ী আমাদের স্টেশনে পৌঁছে দিল।

    বিলুর সে এক মজাদার যাত্রা

          ক্ষেতের পাশ দিয়ে যেতে তার দারুন লাগছিল।